বাংলাদেশের বিজয় দিবসে সবাইকে আমার অভিবাদন জানাচ্ছি। ১৯৭১ সাল থেকে যে যাত্রার শুরু তার শেষ এখনো হয়নি। ঠান্ডা যুদ্ধ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চোখ রাঙানি আর আন্তর্জাতিক রাজনীতির ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ প্রতিরোধ এবং রক্তপাতের পর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা এবং লক্ষাধিক শহীদের কোরবানির মধ্যে দিয়ে এই স্বাধীনতা সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করি ভারতীয় সৈনিকদের যাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগী হিসাবে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন আর ভারতের জনসাধারণকে যাঁরা অকুণ্ঠ চিত্তে সমর্থন জুগিয়েছিলেন।
এ কথা সত্যি যে বাংলাদেশের অনেক স্বপ্ন অধরা রয়ে গেছে। বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়েছে কিনা, তা সে দেশের নাগরিকরা বলতে পারবেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ষাটের দশকের আফ্রিকার ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি, সত্তরের দশকে ভিয়েতনামের ঐক্য প্রতিষ্ঠার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মতাদর্শগত বিজয় মানব প্রগতির।
বাংলাদেশের গল্প শেষ করি এই বলে যে, আজকের বাংলাদেশ সামাজিক উন্নয়নের প্রতীক। নারীস্বাস্থ্য অনেক উন্নত, শিশুমৃত্যুর হার কমের দিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার ক্ষমতা অনেক বেশি, উন্নয়নের হার দক্ষিণ এশিয়াতে সব থেকে উঁচুতে এবং জীবন যাত্রার মান, ভারত এবং পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্মলগ্নে কিসিঞ্জার সাহেব বলেছিলেন, একটা ভিখারি দেশ।
আজকের বাংলাদেশ সেই অপবাদের জবাব দিয়েছে। বাঙালি হিসেবে তাই নিয়ে আমার গর্ব রয়েছে। হয়তো বাংলাদেশিরা আমার মতো মানুষের জন্যে তোয়াক্কা করেন না। কিন্তু মারিলে কলসি কানা তাই বলে কি প্রেম বিলাবো না।
জয় বাংলা
ইনকিলাব জিন্দাবাদ